পাইলস এর ব্যথা কমানোর উপায় | বিস্তারিত গাইড

পাইলস (Haemorrhoids), মূলত মলদ্বারের একটি রোগ। নানা কারণে আমরা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি। এটি সাধারণত মলদ্বারের চারপাশে অথবা মলদ্বারের ভিতরে শিরা ফুলে যাওয়ার কারণে ঘটে, যার ফলে ব্যথা, চুলকানি এবং রক্তপাত হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাইলসের ব্যাথা খুব কম থাকে, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে পাইলসের ব্যথা অনেক সময় অত্যন্ত অসহনীয় পর্যায়ে চলে যেতে পারে।

তবে কিছু সহজ এবং কার্যকরী উপায় গ্রহন করলে আমরা পাইলসের এই অসহনীয় যন্ত্রনা থেকে বাঁচতে পারি। এই ব্লগে, আমরা পাইলসের ব্যথা কমানোর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায়ের আলোচনা করব। পাইলসের ব্যাথা কমানোর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন, ল্যাব এইড হাসপাতালের পাইলস বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, ডা. তারিক আখতার খান।

পাইলস এর ব্যথা কমানোর উপায়

পাইলস এর ব্যাথা কমানোর কার্যকারী কিছু টিপস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম কী?

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরা পাইলস এর ব্যাথা কমানোর নানা গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এরকম কিছু কার্যকারী টিপস তুলে ধরছি এই সেকশনে। সঠিকভাবে জানতে মনোযোগ সহকারে পড়ুন:

পাইলস এর ব্যাথা কমানোর কার্যকারী কিছু টিপস

১. সঠিক ডায়েট মেনে চলুন

সঠিক ডায়েটের মাধ্যমে পাইলসের সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব। যেসব খাবার খেতে পারেন, যেমন:

  • ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার: ফল, শাকসবজি, ফুলকপি, মটরশুঁটি, এবং হোল গ্রেইন (whole grain) খাদ্য গ্রহণ করলে হজমের সমস্যা কমে এবং মলের মাধ্যমে চাপ কমে, যার ফলে পাইলসের ব্যথা কমে যায়।
  • পানি খান বেশি: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে আপনার শরীরে আর্দ্রতা বজায় থাকবে এবং মল নরম হবে, যার ফলে পাইলসের ব্যথা কমবে।

২. ব্যথা উপশমকারী বস্তু ব্যবহার করুন

পাইলসের ব্যথা কমানোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট বস্তু ব্যবহার করতে পারেন:

  • সিজবাথ: যদি পাইলসের ব্যথা খুব বেশি থাকে, তাহলে হালকা গরম পানিতে বসে থাকতে পারেন। এটি পাইলসের ফুলে যাওয়া শিরাগুলোকে শান্ত করে এবং ব্যথা কমায়।
  • টপিক্যাল ক্রিম বা অয়েন্টমেন্ট: পাইলসের জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের ক্রিম বা অয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায়, যা ব্যথা এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।

৩. নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম

যতটা সম্ভব শারীরিক কার্যকলাপ করতে হবে, যেমন হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম। দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে থাকা পাইলসের ব্যথা বাড়াতে পারে। তাই যদি দীর্ঘ সময় বসে কাজ করেন, তবে মাঝে মাঝে উঠে হাঁটাহাঁটি করা বা শরীর নড়াচড়া করা জরুরি।

৪. মলত্যাগের সময় সতর্কতা

মলত্যাগের সময় খুব বেশি চাপ প্রয়োগ না করা অত্যন্ত জরুরী। চাপ প্রয়োগ করলে মলদ্বারে শিরাগুলো আরও ফুলে যায় এবং ব্যথা বাড়ে। চেষ্টা করুন মলত্যাগের সময় বেশী চাপ না দিতে এবং প্রয়োজনে কয়েক মিনিট বিশ্রাম নিয়ে আবার চেষ্টা করুন।

৫. গরম পানি দিয়ে গোসল

গরম পানিতে কিছুটা সময় বসে থাকলে পাইলসের ব্যথা অনেকটা কমে যেতে পারে। গরম পানির মাধ্যমে মলদ্বারের শিরাগুলোর তাপমাত্রা বাড়ানো হয় এবং এটি ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। দিনে এক বা দুইবার গরম পানিতে গোসল করা ভালো।

৬. হারবাল প্রতিকার

অনেকে পাইলসের ব্যথা কমাতে হারবাল প্রতিকারও ব্যবহার করেন। যেমন:

  • অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা জেল মলদ্বারে লাগালে তা ব্যথা এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • হ্যামামেলিস: হ্যামামেলিসের গুনাগুণের কারণে এটি পাইলসের ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।

৭. প্রপার মেডিকেল ট্রীটমেন্ট

যদি ঘরোয়া উপায়গুলো কাজ না করে এবং ব্যথা বেড়ে যায়, তবে পাইলসের চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। চিকিৎসক সাধারণত পাইলসের ব্যথা কমাতে কিছু ঔষধ প্রদান করবেন অথবা সার্জারি প্রয়োজন হতে পারে যদি পাইলস গুরুতর হয়ে থাকে।

৮. পাইলসের প্রতিরোধে সচেতনতা

পাইলসের ব্যথা কমানোর পাশাপাশি প্রতিরোধও জরুরি। এজন্য কিছু নিয়ম মেনে চলুন:

  • দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে না থাকা।
  • ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করা।
  • হালকা ব্যায়াম করা।

বিশেষজ্ঞ পাইলস ডাক্তারের পরামর্শ নিন

পাইলসের ব্যথা অস্বস্তিকর হতে পারে, তবে সঠিক যত্ন এবং উপায় অনুসরণ করলে আপনি এটি সহজেই কমাতে পারেন। তবে ঘরোয়া উপায়ে কাজ না হলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা আপনার জন্য জরুরী। ডা. তারিক আখতার খান, একজন অভিজ্ঞ এবং বিশেষজ্ঞ পাইলস চিকিৎসক, যিনি দীর্ঘদিন ধরে পাইলস, অ্যানাল ফিশার, অ্যানাল ফিস্টুলা সহ মলদ্বারের অন্যান্য সমস্যার চিকিৎসা করে আসছেন। ড. তারিক আখতার খান এর পরামর্শ নিয়ে আপনি আপনার পাইলসের সমস্যা দ্রুত নিরাময় করুন।

সম্পর্কিত প্রশ্ন

পাইলসের ব্যথা কমানোর জন্য ঘরোয়া চিকিৎসা, যেমন উষ্ণ পানিতে স্নান, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।

পাইলসের ব্যথা কমানোর জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, যেমন ফলমূল, শাকসবজি, ওটস, এবং পরিপূর্ণ শস্য খাবার খাওয়া উপকারী।

পাইলসের ব্যথা চিরতরে দূর করতে হলে সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন আনতে হবে, যেমন স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা।

না, আইবিএস (ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম) পেটের দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা, যা অন্ত্রের অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি করে, যেমন পেটে ব্যথা ও গ্যাস। অন্যদিকে, আমাশয় হল অন্ত্রের প্রদাহ যা আম বা বিজল তৈরি করে। দুইটি সমস্যা ভিন্ন এবং তাদের উপসর্গ ও চিকিৎসা আলাদা।
Call Receptionist
Call for Appointment
Make An Appoinment

Appointment Scheduling Time: 9 AM - 10 PM

  1. Dhanmondi Diagnostic & Consultation Center
  2. Impulse Hospital
  3. Labaid Cancer Hospital
Arrow